সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে ফেসবুকের কারণে অনেক ঘরোয়া এবং ছোট ব্যবসা সমৃদ্ধি পেয়েছে। সৎ ও আন্তরিক ব্যক্তিরা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও অনেক অসৎ স্ক্যামার ও ফ্রডও রয়েছে। যাদের প্রতারণার পর খোঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমের কারণে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি পরিষেবা প্ল্যাটফর্মও বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী ব্র্যান্ডিং এবং সুনাম বজায় রাখতে সততা গুরুত্বপূর্ণ।
আজ আমি এমন একজন মহিলার গল্প বলতে যাচ্ছি যার নিজ লেখায় গল্প পড়ুন। তিনি চাকরির খোঁজ করছেন না, বরং নিজ হাতে বানানো "নকশি পিঠা" ব্যবহার করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি আমাকে এমন অনেক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নমুনা পাঠিয়েছেন। আমরা আমাদের মতামত এবং যোগাযোগের তথ্য বিনিময় করেছি। মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেছি। আমি আমার আসন্ন অনলাইন ব্যবসা "বাবা বাজার" সম্পর্কে আমার স্বপ্ন শেয়ার করেছি যা ২০২৫ সালের জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারিতে চালু হতে চলেছে। পণ্য এবং সৎ সরবরাহকারীদের সন্ধান করা আমার লক্ষ্য ছিল।
নকশি পিঠা – নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস (Naksi Pita – Norsingdi'r Oitijjho Bahibi Itihas)
নকশি পিঠা শুধু একটি খাবার নয়, এটি বাংলাদেশের লোকশিল্প ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন। বিশেষ করে নরসিংদীর ইতিহাসে এই পিঠার একটি বিশেষ স্থান আছে।
ঐতিহ্য ও উৎপত্তির কথা (Oitijjho o Utpotir Kotha):
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, নকশি পিঠার উৎপত্তিস্থল ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায়। ধারণা করা হয়, ব্রিটিশ শাসনামলে মেঘনা নদীর তীরবর্তী কোনো এক গ্রামের মহিলারা চালের গুঁড়ো দিয়ে বিভিন্ন আলপনা তৈরি করতেন। সেই আলপনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তেরো বছর বয়সী এক কিশোরী চালের পিটকে খেজুর কাঁটা দিয়ে নকশা করে এক নতুন রূপ দেয়। সেই থেকেই নকশি পিঠার প্রচলন শুরু।
নরসিংদীর মহিলারা তাদের সুনিপুণ হাতের কাজ ও শিল্প মনের পরিচয় এই পিঠার মাধ্যমে তুলে ধরেন। শিক্ষা ও সুযোগের অভাবে তাদের প্রতিভা বিকাশের তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। তাই নকশি পিঠা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে।
নকশার বৈচিত্র্য (Nakshar Boichitro):
নকশি পিঠায় বিভিন্ন ধরনের নকশা দেখা যায়, যেমন - শঙ্খলতা, কাজললতা, চিরল বা চিরনপাতা, হিজলপাতা, সাজনপাতা, উড়িয়া ফুল, পদ্মদিঘী, সর্পিল, চম্পাবরণ, কন্যামুখ, জম্মিমুখ, জামাইমুছড়া, সতীন্মুছড়া ইত্যাদি। এই নকশাগুলো পিঠার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং প্রতিটি নকশার নিজস্ব অর্থ ও তাৎপর্য রয়েছে।
উৎসব ও অনুষ্ঠানে (Utsob o Onusthane):
নকশি পিঠা সাধারণত বিভিন্ন উৎসবে, যেমন - পৌষ সংক্রান্তি, বিয়ে, বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়। এটি উপহার হিসেবেও দেওয়া হয়।
নরসিংদীর নকশি পিঠা আজ শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি নরসিংদীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক গর্বিত অংশ।
এই নকশি পিঠাকে "বাবা বাজার"পন্য হিসাবে আমাদের নামে ব্রান্ডিং করে চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে মার্কেটিং করার কথা হয়েছে। তাঁর ঢাকা শিফট হয়ে উৎপাদন ও ডেলিভারীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে বলে আমাকে জানিয়েছেন।